The Genie - 2 books and stories free download online pdf in Bengali

আত্মা - 2

রাতের খাবার শেষ করে সবাই যার যার রুমে চলে গেছেন। তুরেছা মামার বাড়ি এলে মামাতো বোনদের সাথে ঘুমায়। তাদের অর্ধেক রাত কেটে যায় হাসাহাসি মাতামাতি করে। আজকে নানি বললেন তুরেছা আমার সাথে থাকবে। এতো বড়
অঘটনের পর আলাদা দিতে তিনি সাহস পাচ্ছেন না। রাত প্রায় সাড়ে বারোটা, হঠাৎ করে তুরেছার ঘুম ভেঙে গেল। সে তাকিয়ে দেখল সোজা তার চোখের উপরে আরও দু'টা চোখ। খানিক্ষণ
পরে সে পুরো ঘটনা বুঝে গেল। একটা যুবক তার সমস্ত শরীরের কাপড় খুলে সঙ্গম করছে, দুই হাত দিয়ে খেলা করছে তার স্তন নিয়ে৷ স্পষ্ট এখন শোনা যাচ্ছে যুবকের গোঙানি, হয়তো গোঙানি শুনেই তার ঘুম ভেঙেছে । কিন্তু অদ্ভুত ব্যাপার হচ্ছে পাশে ঘুমন্ত নানি কিছুই বুঝতে
পারছেন না। হঠাৎ তুরেছা দারুণ অবাক হল! সে এতক্ষণে একটা বড়সড় চিৎকার দেবার কথা, চিৎকার দিয়ে পাশ থেকে কম্বল দিয়ে নিজের নগ্ন শরীর ধাকার কথা। সে চিৎকার দিচ্ছে না কেন ?
সে কি কোনো মায়াজালে বন্দী হয়ে যাচ্ছে ? তুরেছা চিৎকার দিয়ে উঠলো। সাথে সাথে অজানা অচেনা ছায়াটা তুরেছার উপর থেকে নেমে গেল। কম্বল দিয়ে নিজেকে ঢেকে নেয়‌ তুরেছা। কিন্তু চিৎকার শুনে নানির ঘুম থেকে উঠার
নাম নেই৷ ওয়াব উদ্দিন হকচকিয়ে ঘুম থেকে উঠে মা'র রুমের দিকে এলেন, এসে দেখেন সেই কালো বিড়াল সারা ঘরে লাফালাফি করছে৷ দেখে মনে হচ্ছে অস্থিরতার মধ্য আছে৷ লাফ দিয়ে
একবার উঠছে আলনায়, আবার টেবিলে, সেখান থেকে আলমিরায়। মেউ মেউ করে হৈচৈ ফেলে দিচ্ছে। বিরক্ত হয়ে ওয়াব উদ্দিন আবার সেই লাঠি হাতে নিয়ে বিড়ালকে ধাওয়া করলেন। কিন্তু একটা
বাড়িও বিড়ালের উপরে ফেলা যাচ্ছে না, বিড়াল শুধু মেউ মেউ করে লাফালাফি করছে৷ ওয়াব উদ্দিন বিড়ালের সাথে দৌড়াদৌড়ি করে ঘেমে গেছেন৷

আচমকা বিড়াল পাশের রুমে চলে গেল, সেখানে বাতি নেই। তিনি লাঠি হাতে নিয়ে সেই রুমে ঢুকলেন। সাথে সাথে ওয়াব উদ্দিনের চিৎকার শুনে বাড়ির সব সদস্য সেদিকে গিয়ে বাতি জ্বেলে অবাক হয়ে গেলেন। ওয়াব উদ্দিন ফ্লোরে পড়ে আছে, ঘাড়ের রক্তে ভেসে যাচ্ছে ফ্লোর, স্ত্রী দাড়িয়ে আছে স্বামীর রক্তের উপর। কালো বিড়ালের মেউ মেউ শব্দ এখন আর শোনা যাচ্ছে না। মীরা গিয়ে রুমের বাতি জ্বেলে দিল, সাথে সাথে ফ্লোরের দিকে তাকিয়ে সে চিৎকার দিয়ে উঠলো,

স্ত্রী হতবাক হয়ে কয়েক পা পিছিয়ে গেলেন। ওয়াব উদ্দিনের ঘাড় থেকে রক্ত বের হচ্ছে! এটা কিভাবে সম্ভব! কালো বিড়াল কি ঘাড়ে কামড় দিয়েছে ? বাড়িতে ভয়ংকর একটা দূর্ঘটনা ঘটে গেল, তুরেছার সেদিকে ভ্রুক্ষেপ নেই। উল্টো তাদের চিৎকার শুনে সে খিলখিল করে হাসছে৷ ঘুমন্ত নানি এখনও ঘুমিয়ে আছে, মীরা এসে অনেক্ষণ ডাকার পরে তিনি হকচকিয়ে উঠলেন। কে যেন তাকে একটা ঘোর লাগা ঘুমে ফেলে রেখেছিল। মীরা কাদতে কাদতে দাদীকে সেই রুমের দিকে নিয়ে গেল।

ছেলের অবস্থা দেখে নাহেরা বেগমের
ভেতর থেকে হাউমাউ করে কান্না আসছে, তিনি নিজেকে সামলে নিয়ে বললেন; ' কেউ গিয়ে তারেককে নিয়ে আয়। ওয়াব উদ্দিনকে হসপিটাল নিয়ে যেতে লাগবে।( তারেক হচ্ছে মীরাদের চাচাতো ভাই, এক মাস হল সে বিয়ে করেছে )।

তারেক আর মীরার মা গেলেন ওয়াব উদ্দিনকে হসপিটাল নিয়ে। ভোরে তারেক আবার বাড়িতে ফিরে এসেছে, শুধু মীরার মা আছেন স্বামীর সাথে। প্রয়োজনে সে হসপিটাল যাওয়া - আসা
করবে। ঘুমে তারেকের চোখের পাতা বারবার বন্ধ হয়ে আসছে । রুমে এসে বিছানায় তাকিয়ে তার ঘুমের ঘোর অনেকটা কেটে গেল। পিংক কালারের
পাতলা ড্রেস পরনে একটা রূপবতী মেয়ে
ঘুমিয়ে আছে। তার চোখের ভ্রু ঘন কালো, খোলা চুল সযত্নে বালিশের এক পাশে রাখা। তারমানে গোসল করে এসে আবার ঘুমিয়েছে। ফ্যানের বাতাসে চুল শুকানোর জন্য এভাবে রাখা। তারেকের এই মুহুর্তে মনে হচ্ছে বিছানার এই
রূপবতীকে তার খুব অচেনা, প্রতিদিনই কেবল অচেনা অজানা নতুন মেয়ে লাগে তার কাছে। তারেক ফ্লোরে হাটু ঘেরে শীলার মুখে হাত
রেখে বসল, চুল থেকে সদ্য ব্যাবহার করা শ্যাম্পুর ঘ্রাণ আসছে। উপরে ইলেক্ট্রিক ফ্যান ঘুরছে। তার চোখ শীলার মুখ থেকে পিছলে শরীরে গেল, পিংক কালারের পাতলা ড্রেসকে যেন ডিঙিয়ে শীলার ভাজে ভাজে যৌবন ফুলেফেঁপে উপচে পড়ছে। তারেক আবার শীলার মুখের
দিকে তাকাল, গভীর ভালোবাসায় স্ত্রীর কপালে একটা চুমু খেল। সাথেসাথে শীলা চোখের পাতা খুলে মুখ টিপে হাসল। তারেকের ধারণা এই মেয়েটা এতক্ষণ জেগেই ছিলো, এটা ভাবতেই তার কেমন জানি লজ্জা লাগছে।

তুরেছার অবস্থা খুবই খারাপ, উল্টাপাল্টা কথা বলছে। শারীরিক অবস্থাও যেন অনেকটা পরিবর্তন হয়ে গেছে, বারবার নিজের পেটে হাত দিয়ে নানিকে
বলছে, 'আমার বাবু হবে।' কথাটা বলেই সে আবার খিলখিল করে হাসছে। শুধু এখানেই থেমে গেলে ভয় ছিলো না, সকাল থেকে তিনবার বমি করেছে। বমি করে আবার বলছে, 'দেখলে
তো নানি আমার বাবু হবে।'

চলবে....